গণতন্ত্রের মাধ্যমে দ্বীন প্রতিষ্ঠা এক বৈপরীত্য –



‎মক্কার কাফেররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে একটি আপোষমূলক প্রস্তাব দেয়। তারা বলে:

‎> “হে মুহাম্মাদ! তুমি কিছুদিন আমাদের উপাস্যদের পূজা করো, আর আমরা কিছুদিন তোমার উপাস্য আল্লাহর ইবাদত করবো।”

‎তাদের এই প্রস্তাবের জবাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা স্পষ্টভাবে সুরা আল-কাফিরুন নাযিল করেন:

‎> قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ • لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ • وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ…
‎হে নবী আপনি “বলুন! হে কাফিরগণ! আমি উপাসনা করিনা, যাদের তোমরা উপাসনা করো…’’
‎(সূরা আল-কাফিরুন: আয়াত ১-৬)

‎এই আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, দ্বীনের ব্যাপারে কোনো আপোষ চলে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনের প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কখনোই মুশরিকদের প্রথা বা মতাদর্শ গ্রহণ করেননি, বরং তিনি সর্বতোভাবে তাওহীদের উপর অবিচল থেকেছেন।

‎গণতন্ত্র – একটি মানবসৃষ্ট মতবাদ

‎গণতন্ত্র এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মানুষের মতকে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব দেওয়া হয়—”জনগণই সার্বভৌম”, আইন প্রণয়নের অধিকার মানুষের হাতে। অথচ ইসলাম বলে:

‎> إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ
‎“ফায়সালার অধিকার একমাত্র আল্লাহর।”
‎(সূরা ইউসুফ: ৪০)

‎এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠে—আমরা কীভাবে একটি কুফরী ভিত্তিক মতবাদ (গণতন্ত্র) গ্রহণ করে ইসলামী শাসন কায়েম করতে চাই? এটা এমনই একটি বৈপরীত্য, যেন কেউ কাঁটা যুক্ত গাছে উঠে আবার দাবি করে, “আমার গায়ে কোনো কাঁটা বিদ্ধ হয় না,” অথচ শরীর দিয়ে রক্ত ঝরছে!

‎ইসলামের দৃষ্টিতে আপোষের পরিণতি

‎রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় ১৩ বছর কষ্ট সহ্য করে, বয়কট ভোগ করে, তবুও দ্বীনের কোন রূপরেখা বিকৃত করেননি। কখনো বলেননি যে, “চলুন মুশরিকদের ব্যবস্থার সাথে আপোষ করে ইসলাম চালু করি।” বরং তিনি দ্বীনের মূলনীতি অক্ষুণ্ণ রেখেই বিজয় অর্জন করেন।

‎দ্বীন প্রতিষ্ঠা কিভাবে হবে?

‎দ্বীন প্রতিষ্ঠা হবে কেবলমাত্র সেই পন্থায় যা কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ নির্ধারণ করেছে—তাওহীদ ভিত্তিক সমাজ গঠন, তাযকিয়াহ, সত্য ও মিথ্যার স্পষ্ট পার্থক্য, হিজরাহ ও জিহাদের মাধ্যমে, আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।

‎আমরা যদি সত্যিই দ্বীন প্রতিষ্ঠা করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে দ্বীনের নিজস্ব নীতিমালায় অটল থাকতে হবে। কুফরী ভিত্তিক গণতন্ত্র বা অন্য কোনো মানবসৃষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা শুধু আত্মপ্রতারণা নয়, বরং এটি দ্বীনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।

‎আল্লাহ বলেন:

‎> وَلَن تَرْضَىٰ عَنكَ ٱلْيَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَـٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ
‎“ইহুদী ও খ্রিস্টানরা কখনোই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মের অনুসরণ করো।”
‎(সূরা আল-বাকারা: ১২০)

‎আবু নুসাইবা আল হিন্দি

Share With freinds & Others

Leave a Comment